ইতিহাস ও ঐতিহ্য
ভোলার নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত প্রচলিত রয়েছে। কেউ বলেন এটি মেঘনার ভাঙন এবং চরগঠনের কারণে নতুন ভূমি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। আবার কেউ কেউ বলেন, একসময় এখানে “ভোলা গাজী” নামে একজন সাধকের বসবাস ছিল, যার নামে জেলার নামকরণ করা হয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
ভোলা জেলা প্রকৃতির অপার লীলাভূমি। নদীবিধৌত চরাঞ্চল এবং সবুজ মাঠ এই জেলার প্রধান বৈশিষ্ট্য। কুকরি-মুকরি দ্বীপ, যা ভোলার অন্যতম আকর্ষণ, সমুদ্র তীরবর্তী বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। এখানে অতিথি পাখির কলরব, সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ এবং গাছের শীতল ছায়া প্রকৃতিপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যায়।
অর্থনীতি
ভোলা একটি কৃষিপ্রধান জেলা। ধান, পাট, এবং বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদনের জন্য এটি বিখ্যাত। এছাড়া মৎস্য সম্পদেও এই জেলা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তেল ও গ্যাসের খনির জন্য ভোলা জাতীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
পরিবহন ও যোগাযোগ
ভোলা সরাসরি সড়ক পথে অন্যান্য জেলার সাথে সংযুক্ত নয়। নদীই এখানে প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। ফেরি এবং নৌযান ভোলাকে দেশের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করেছে।
শিক্ষা ও সংস্কৃতি
ভোলা জেলার শিক্ষার মান ক্রমাগত উন্নতি করছে। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি নামকরা স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা। সাংস্কৃতিকভাবে ভোলা সমৃদ্ধ; বাউল গান, জারি-সারি, এবং স্থানীয় মেলা এই জেলার লোকসংস্কৃতির পরিচায়ক।
ভোলার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ভোলা জেলার প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। এছাড়া পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সঠিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া যায়, তাহলে ভোলা হতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
ভোলা তার ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য একটি অনন্য জেলা। বাংলাদেশের এই বৃহত্তম দ্বীপ জেলা শুধু স্থানীয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। ভোলার রূপের সঙ্গে পরিচিত হতে প্রত্যেকের একবার হলেও এখানে ভ্রমণ করা উচিত।